তুমি জেনেছিলে

তুমি জেনেছিলে মানুষে মানুষে হাত ছুঁয়ে বলে বন্ধু তুমি জেনেছিলে মানুষে মানুষে মুখোমুখি এসে দাঁড়ায় হাসি বিনিময় করে চলে যায় উত্তরে দক্ষিণে তুমি যেই এসে দাঁড়ালে- কেউ চিনলো না কেউ দেখলে না সবাই সবার অচেনা!

তমসার তীরে নগ্ন শরীরে

চিত্ত উতলা দশদিকে মেলা সহস্র চোখ আমাকে এবার ফিরিয়ে নেবার জন্য এসেছে? আর দুটো দিন করুণ রঙিন পথ ঘুরে দেখা হবে না আমার? পুরোনো জামার ছিঁড়েছে বোতাম? তমসার তীরে নগ্ন শরীরে দাঁড়ালাম আমি পাশে নেই আর মায়া-সংসার আকাশে অশনি নদীটি এখন বড় নির্জন জলে শীত ছোঁওয়া কে জানে কোথায় ন্যায়-অন্যায় সহসা লুকালো এক অঞ্জলি জল […]

ঝর্ণার পাশে

ঝর্ণার ডুব দিয়ে দেখি নিচে একটা তলোয়ার একটুও মর্চে পড়েনি, অতসী ফুলের মতো আভা আমার হাতের ছোঁয়ায় হঠাৎ ভেঙে গেলে তার ঘুম তুলে নিয়ে উঠে আসি, চুপ করে বসে থাকি কিচুক্ষন কাছাকাছি আর কেউ নেই যেন ঝর্ণাটাই আমার হাতের মুঠোয়, রৌদ্রে দেখছি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মাঝে মাজে এক-একটা ঝিলিকে চোখ ঝলসে যায় মনে হয় না বহু […]

জল বাড়ছে

কেউ জানে না, গোপন- গোপনে জল উঠছে জল বাড়ছে তিস্তায়, জল বাড়ছে তোর্সা রাইডাক কালজানি নদীতে জল বাড়ছে, জল বাড়ছে, শুকনো নদীগুলো এখন উন্মাদিনী নেমে আসছে পাহাড়ী ঢল, ভেসে যাচ্ছে ফসলের ক্ষেত, ভেঙে পড়ছে চা-বাগান ডুবছে গ্রাম, চুয়াপাড়া, হাসিমারা, বাকসাদুয়ার জল বাড়ছে মহানন্দায়, জল বাড়ছে পুনর্ববা নাগর এবং কালিন্দীতে ক্রুদ্ধ বিদ্রোহী জল ফুঁসে ফুঁসে উঠছে […]

ছবি খেলা

মনে আছে সেই রাত্রি? সেই চাকভাঙা মধুর মতন জ্যোৎস্না উড়ো উড়ো পেঁজা মেঘ অলীক গর্ভের প্রজাপতি দুগ্ধবর্ণ বাতাসের কখনো স্পর্শ ও ছবি খেলা মিনারের মতোন পাঁচটি প্রচীন সুউচ্চ গাছ, সেই মানবিক চষা মাঠ, তিনটি দিগন্ত দূর, আরও দূর পুকুরের ঢালু পাড়ে তুমি শুয়ে ছিলে মনে আছে সেই রাত্রি, সঠিক পথেই ঠিক ভুল করে যাওয়া? বুকে […]

কবিতা মুর্তিমতী

শুয়ে আছে বিছানায়, সামনে উম্মুক্ত নীল খাতা উপুড় শরীর সেই রমণীর, খাটের বাইরে পা দু’খানি পিঠে তার ভিজে চুল, এবং সমুদ্রে দু’টি ঢেউ ছায়াময় ঘরে যেন কিসের সুদন্ধ, – জানায় রৌদ্র যেন জলকণা, দূরে নীল নক্ষত্রের দেশ। কী লেখে সে, কবিতা? না কবিতা রচনা করে তাকে? সে বড় অসি’র, তার চোখে বড় বেশী অশ্রু আছে […]

সহজ

কেমন সহজ আমি ফোটালাম একলক্ষ ফুল হঠাৎ দিলাম জ্বেলে কয়েকটা সুর্য চাঁদ তারা আবার খেয়াল হলে এক ফুঁয়ে নেভালাম সেই জ্যোৎস্না (মনে পড়ে কোন্‌‌ জ্যোৎস্না?) নেভালাম সেই রোদ (তাও মনে পড়ে?) নিন্দুকে নানান কথা আমাকে দেখিয়ে বলবে, বিশ্বাস করো না। হয়তো বলবে শিশু কংবা নির্বোধ অথবা ম্যাজিকওয়ালা- ছেঁড়া তাঁবু ফাটা বজনা, নানান সেলাই করা কালো […]

বিবৃতি

ঊনিশে বিধবা মেয়ে কায়ক্লেশে উন্‌তিরিশে এসে গর্ভবতী হলো, তার মোমের আলোর মতো দেহ কাঁপালো প্রাণান্ত লজ্জা, বাতারে কুটিল সন্দেহ সমস্ত শরীরে মিশে, বিন্দু বিন্দু রক্ত অবশেষে যন্ত্রনার বন্যা এলো, অন্ধ হলো চক্ষু, দশ দিক, এবং আড়ালে বলি, আমিই সে সুচতুর গোপন প্রেমিক। দিবাসার্ধ পায়ে হেঁটে লিরি আমি জীবিকার দাসত্ব-ভিখারী ক্লান্ত লাগে সারারাত, ক্লান্তি যেন অন্ধকার […]

প্রার্থনা

ঋজু শাল অশ্বত্থের শিকড়ে শিকড়ে যত ক্ষুধা সব তুমি সয়েছ, বসুধা। স্তব্ধ নীল আকাশের দৃশ্য অন্তহীন পটভূমি চক্ষুর সীমানা-প্রান্তে বেঁধে দিয়ে তুমি এঁকে দিলে মাঠ বন বৃষ্টি-মগ্ন নদী-তার দুরাভাস তীর আমাকে নিঃশেষে দিলে তোমার একান্ত মৃদু মাটির শরীর। আমার জন্মের ভোর সূযর্য-শরে আহত মাটিতে প্রত্যহকে ধরে থাকা অবাধ্য মুঠিতে। নিবির ঘুমের মৌন জীবনের অস্পষ্ট আভাসে […]

দুপুর

রৌদ্রে এসে দাঁড়িয়েছে রৌদ্রের প্রতিমা এ যেন আলোরই শস্য, দুপুরের অস্থির কুহক অলিন্দে দাঁড়ানো মূর্তি ঢেকে দিল দু’চক্ষুর সীমা পথ চলতে থম্‌কে গেলো অপ্রতিভ অসংখ্য যুবক। ভিজে চুল খুলেছে সে সুকুমার, উদাস আঙুলে স্তনের বৃন্তের কাছে উদ্বেলিত গ্রীষ্মের বাতাস কি যেন দেখলো মিলে এক সঙ্গে নিল দীর্ঘশ্বাস। একজন যুবক শুধু দূর থেকে হেঁটে এসে ক্লান্ত […]