আট কুঠুরি নয় দরজা –১১

ক্রমশ ওরা শহরের একেবারে পশ্চিমপ্রান্তে চলে এল। এদিকটায় জনবসতি কম। মোটামুটি বধিষ্ণু মানুষেরা অনেকটা জায়গা জুড়ে বাগানঘেরা বাড়িতে থাকেন। হায়দার ইশারা করতেই ট্যাক্সি থামল। ড্রাইভার নিজে দরজা খুলে সুটকেশ দুটো নীচে নামিয়ে ইঙ্গিত করল নেমে আসতে। স্বজন এবং পৃথা একটা কথাও বলেনি টুরিস্ট লজ থেকে চলে আসার পথটুকুতে স্বজন এখন জিজ্ঞাসা করল, এখানে কেন? সামনে […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১২

চেকপোস্টের আগে নেমে পড়ে নিজেকে বুদ্ধিমান বলে ভেবে খুশি হয়েছিল সোম। যেভাবে শহরের বাইরেও পুলিশভ্যান টহল দিচ্ছে তাতে ওই মারুতি গাড়িতে থাকলে এতক্ষণে মাটির তলার ঘরে চালান হয়ে যেত সে। চেকপোস্টে নিশ্চয়ই ভাল করে গাড়ির আরোহীদের জেরা করা হচ্ছে। সোম নেমে পড়েছিল খানিকটা আগে এবং রাস্তা উঠে এসেছিল পাহাড়ে। সেখান থেকে রাস্তাটা পরিষ্কার দেখা যায়। […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৩

দুপুরেই শহরটার অনেকখানি উৎসবে যোগ দিতে আসা মানুষে ভরে গেল। এবার শহরের সব রাস্তায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের। বিগ্ৰহ থাকবে যে মাঠে সেখানেই ভিড়টা বেশি। উৎসব শুরু হতে এখনও চব্বিশ ঘন্টা বাকি। যতই চিতার পোস্টার পুলিশ ছড়িয়ে দিক, রাজনৈতিক উত্তেজনার চেয়ে ধমীয় আচারঅনুষ্ঠানের প্রতি আগ্রহগ্রামের মানুষের মনে প্রবল। কৌতূহলের ব্যাপার হল শুধু বিশেষ এক […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৪

দুপুরের খাবার খারাপ ছিল না। স্বজন প্রথমে আপত্তি করছিল, কিন্তু তাকে বুঝিয়েছিল না খেলে তাঁর শরীরই কষ্ট পাবে, কাজের কাজ কিছু হবে না। স্ত্রী অথবা নিকটতম বান্ধবীকে পুরুষমানুষ সহজে নিজের কাজের কথা বলতে চায় না। খামেকা বিব্রত না করার ইচ্ছেই হয়তো তার কারণ। কিন্তু সমস্যা যখন প্রবল হয়ে ওঠে, যখন পিঠের পেছনে দেওয়াল নেই, তখন […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৫

আকাশলাল হাসিমুখে মাথা নাড়ল। আপনার নাক, চোখের ওপরের সামান্য পরিবর্তনেই সেটা সম্ভব। আর তার জন্যে মুখে কোনও দাগ হবে না। ব্যাপারটা কখন করতে হবে?-স্বজন জিজ্ঞাসা করল। আরও দুটো দিন আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে ডাক্তার। তার মানে আরও দুটো দিন আমাদের ওই ভাবে বন্দি হয়ে থাকতে হবে? স্বজনের গলায় আগের অসন্তোষ ফিরে এল। হায়দার বলল, আপনার […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৬

এই এতটা পথ আসর সময়ে তার মনে অনেকবার সন্দেহ এসেছে সোম দেখছিল মেয়েটাকে। কিন্তু ওদের সাহায্য ছাড়া তার পক্ষে শহরে ঢোকা সম্ভব হত না। প্ৰায় বাধ্য হয়েই সে এদের কথা মেনে চলেছে। কিন্তু শহরে ঢোকার পর তার মাথায় দ্বিতীয় চিন্তা এসেছিল। এদের সঙ্গে যদি আকাশলালদের সরাসরি যোগাযোগ থাকে, তাহলে এদের সূত্র ধরেই সে লোকটার কাছে […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৭

গতরাত্রে বিছানায় শুয়ে থাকতে পারেনি ভার্গিস। অন্ধকার থাকতেই উঠে এসে বসেছিল নিজের চেয়ারে। এখন ভোর। এখন এই বিশাল পুলিশ-হেডকোয়ার্টার্স শব্দহীন। এত বড় অফিস-ঘরে তিনি একা। জানলার বাইরে পৃথিবীটা ধীরে ধীরে রং পাল্টাল। একটা দিন আসছে। হয়তো শেষ দিন তাঁর ক্ষেত্রে। এই দিনটার মোকাবেলা তিনি কিভাবে করবেন। সেটাই স্থির করতে হবে। আজ যদি আকাশলালকে ধরা সম্ভব […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৮

সকাল আটটায় বৃদ্ধ ডাক্তারকে এই ঘরে নিয়ে আসা হল। ভদ্রলোককে দেখেই মনে হল তিনি গত রাত্রে এক ফোটা ঘুমোতে পারেননি। আকাশলাল বলল, সুপ্ৰভাত ডাক্তার। সুপ্ৰভাত। ভদ্রলোক এক দৃষ্টিতে আকাশলালকে দেখছিলেন। আপনি কি সুস্থ নন ডাক্তার? অসুস্থ? আমি? হা ভগবান। কে কাকে বলছে। আপনি কেমন আছেন? আজ আমি খুব ভাল আছি। একদম তাজা। শুয়ে পড়ুন। অতএব […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –১৯

রিসিভারটা যেন কানের ওপর সেটে ছিল। সম্বিত ফিরতেই সেটাকে সরিয়ে নিয়ে কিছুটা নরম গলায় ভার্গিস বললেন, হ্যালো! এক দুই তিন সেকেন্ড যেতে না যেতে ভার্গিস বুঝতে পারলেন লাইনটটা ডেড হয়ে গেছে। আমি আত্মসমর্পণ করছি এবং সেটা বন্ধুভাবেই হোক। ধীরে ধীরে রিসিভারটা নামিয়ে রেখে দুহাতে মুখ ঢাকলেন ভার্গিস। গলাটা সত্যি আকাশলালের তো। কোনও রকম কথা বলার […]

আট কুঠুরি নয় দরজা –২০

কথা বাতাসের আগে ছোটে। আকাশলাল আজ মেলার মাঠে ভার্গিসের কাছে ধরা দেবে এমন খবর চাউর হাওয়া মাত্র সেটা এই শহরের মানুষদের নিঃশ্বাস ভারী করে তুলল। যাকে ধরতে সরকার কত রকমের অত্যাচার মানুষটি আজ স্বেচ্ছায় ধরা দিতে আসবে এমন বিশ্বাস করা অনেকের পক্ষেই কঠিন। কিন্তু মানুষ বিশ্বাস না করলেও কৌতূহলী হয়। আর সেই কারণেই মেলার মাঠ […]