স্বাগত ১৪২০

রোদ্দুরের আনাজ সবুজে আমি শুনে উঠছি স্বর—
সামনে নতুন দিন! নতুন বছর!
আকাশে কয়েকটি ঘুড়ি। এক বালকের হাতে—
তার একটি পড়ে গেল ওই ভোকাট্টাতে।
এভাবেই ছিঁড়ে পড়ে সংসারের বঁইচির হার।
ভরে ওঠে কান্নায় পাথার—
অথচ ঘুড়িটা পড়ে যেতে কী উল্লাস!
কাল বুড়ো বটের ছায়ায় গামছা বিছিয়ে তাস—
উনত্রিশ তাসের খেলা। তবে এ জীবন
হয়তো জুয়ার মতো—হরতন, টেক্কা ইস্কাপন!
প্রান্তরে নাগরদোলা দেখি ঘুরে চলেছে এখনি,
বসে গেছে ধুলায় বিপণি
কুড়ুল কোদাল বটি থালা বাসনের,
পুতুল আয়না চুড়ি তেল ফিতে সস্তা সাজনের।
ভিয়েনে মিষ্টির গন্ধ, গামছায় বাঁধা
ছানা থেকে টপটপ জল, দূরে কবিয়ালের গলা সাধা।
কালকের বিকেলে রাঁধন শেষে বধূটি গাঁয়ের
আলতায় ঢেকে নেবে কর্কশতা পায়ের,
মেয়েটির হাত ভরে চুড়ি দেবে যদি পায়
স্বামীটির অনুমতি সেও যাবে বৈশাখী মেলায়।
বৎসরের আসা-যাওয়া, জোনাকিরা জ্বলে,
কাদাজলে শব্দ তোলে মাছ খলবলে,
অবিরাম হরতন রুহিতন চিঁড়ে
তাসের আসরে পিট—পিট পরে পিট—যদি ফিরে
আসে লক্ষ্মী! আবার সওদাগর বাণিজ্য ডিঙায়!
আশায় আশায় আজও নদীর কিনারে বক আছে অপেক্ষায়
সত্যিই নতুন হয়ে বছরটা যদি আসে আবার হেথায়—
তখন চুমোর মতো রোদ পড়বে লাউয়ের ডগায়,
প্রাচীন কাদায় বকটিও মাছ পেয়ে যাবে,
কবিয়াল—তার সঙ্গে গলাও মেলাবে
আমাদের ভেতর-মানুষ!
আকাশেও সারা রাত তারা হয়ে উড়বে ফানুস ।

ঢাকা, ৩ এপ্রিল ২০১৩