আমি চলে যাচ্ছি

জয় করবার মতো একটি মনও যখন আর অবশিষ্ট নেই,
তখন আমার আর বসে থেকে কী প্রয়োজন? আমি যাই।
তোমরা পানপাত্র হাতে হোয়াং হো রেস্তোঁরার নির্জনতায়
মৃদু আলোর নিচে বসে মৃদুলের গান শোনো, আমি যাই।
মহাদেব-নীলা-অসীম-অঞ্জনা-কবীর-বদরুন আমি যাই,
ইয়াহিয়া, আমি চললাম। এই-যে নাসরিন, আমি আসি।

যদি কোনোদিন এই রাত্রি ভোর হয়, যদি কখনো আবার
সূর্য ওঠে রূপসী বাংলায়, আবার কখনো যদি ফিরে পাই
আমার যৌবন, যদি পাই অনন্ত স্বপ্নের মতো নারী, কবি
না হয়ে, অন্য যা-কিছু হয়ে আমি ফিরে আসতেও পারি।

অভিভূত কবির মতন নারীকে আমি ভালোবেসেছিলাম।
সুচিত্রা সেনের মতো অপরূপা, বিদুষী-সুন্দরী ছিল তারা,
তাদের দেহে স্বর্গের লাবণ্য ছিল কিন্তু হৃদয় ছিল ঘাস।
আমার প্রেম নিয়ে তারা কত রকমের যে রহস্য করেছে-
গাধা ভেবে কেউবা নাকের ডগায় ঝুলিয়ে দিয়েছে মুলো;
কেউবা উরাত দেখিয়ে-দেখিয়ে কাটিয়েছে কাল। তারপর
একদিন সর্পচর্মবৎ আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চলে গেছে
দূরে। আমি নিঃস্ব গৃহকোণে, তারা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে।
অথচ তাদের কথা ভেবে আমি কেঁদেছি নিদ্রায়-জাগরণে।
এখন আমারও হৃদয়ে আর প্রেম নেই, ভালোবাসা নেই,
বাসনার আলোড়ন নেই, আজ আমারও হৃদয়ে শুধু ঘাস,
শুধু স্মৃতি, শুধু স্মৃতি, শুধু স্মৃতি আর স্মৃতির দীর্ঘশ্বাস।

জয় করবার মতো একটি মনও যখন আর অবশিষ্ট নেই,
তখন আর আমার বসে থেকে কী প্রয়োজন? আমি আর
কতো ভালোবাসবো? আর কার জন্যে অপেক্ষা আমার?
তার চেয়ে এই কি যথার্থ নয়? আমি খুব দূরে চলে যাই।

যদি কোনোদিন এই রাত্রি ভোর হয়, আবার কখনো যদি
সূর্য ওঠে নিষ্ঠুর বাংলায়, আবার কখনও যদি ফিরে পাই
আমার যৌবন, যদি পাই আমার স্বপ্নের সেই নারী, কবি
না হয়ে, অন্য যা-কিছু হয়ে আমি ফিরে আসতেও পারি।

তোমরা পানপাত্র হাতে হোয়াং হো রেস্তোঁরার নির্জনতায়
মৃদু আলোর নিচে বসে মৃদুলের গান শোনো, আমি চলি।
মহাদেব-নীলা-অসীম-অঞ্জনা-কবীর-বদরুন, আমি যাই,
ইয়াহিয়া, আমি চললাম। এই-যে নাসরিন, আমি আসি।