জন্মদিনের কবিতা

আমারো রয়েছে ঋতু, ঋতুচক্রে যেহেতু মানুষ আমি
সকল প্রাণীর মতো আমারো রয়েছে তাই প্রাণ,
আমারো রয়েছে জন্ম, রয়েছে জন্মের প্রতি প্রেম,
রয়েছে মৃত্যুর প্রতি টান।

কারো জন্ম ঋতুর বাহিরে নয়, ঋতুর ভিতরে সব;
জন্ম-মৃত্যু, দিন-রাত্রি, যৌবন-শৈশব। ঋতুবন্দী সব।

ঘনপুঞ্জ জলবিন্দু সম আকাশের নীলে
গ্রীষ্মের সকল বিষ কন্ঠ ভরে গিলে
তুমি ছিলে নীলকন্ঠ দাবদগ্ধ জীবের মিছিলে,
ঝড়েছো জন্মের টানে ফুল।

এ যদি জন্মের স্মৃতি, মাতৃগর্ভ তবে কি আকাশ?
আমার রয়েছে গর্ভ, আমার রয়েছে মাতা,
রয়েছেন অর্ধ-জন্মদাতা পিতা, তাদের মিলিত দীর্ঘশ্বাস
দিয়েছিল দোলা কোন-এক তাপদগ্ধপ্রাতে;
আকাশের মেঘদলে তুলেছিল ঝড়।
তারপর জানি মেঘের জরায়ু থেকে খসে পড়া
জলবিন্দুখানি দু’হাতে অঞ্জলি ভরে করেছিল পান
এক সূর্যভ্রষ্টা নারী, এই পৃথিবীর মাটি।
আমি তাই ঋতুর বন্দী মাটির সন্তান।

যে-কোন জন্মের স্মৃতি কিছু প্রতারক,
জন্ম নয় অব্যর্থ অজানা মৃত্যু, তাই
জন্মকে মৃত্যুর মতো চেনা, অসম্ভব, আমার হবে না।

আজিকার এই জন্মদিনে অস্পষ্ট মেঘের ফাঁকে
মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করি যত
সেই সহজ নারীর মতো দেখি না জন্মকে।
জন্ম তো স্বয়ম্ভু নয়, আষাঢ় মেঘের আঙিনায়
মৃত্যু বসে একা রাত্রি জাগে।
যতই পশ্চাতে যাই, দেখি জন্ম নাই;
সময় নদীর বুকে পড়ে আছে মানুষের মৃত্যুভরা মাটি।
জন্ম তারো আগে।