কী বিষয় কী বিষয়

আররে রবীন্দ্রনাথ

তোমার সঙ্গেই তো নেচেছিলুম সেদিন

আঙুলের ইতিহাসে একতারার হাফবাউল ড়িং ড়াং তুলে

ফ্রিস্কুল স্ট্রিটের জমঘট থেকে সদর স্ট্রিটের লবঙ্গবাজারে

যেতে-যেতে তুমি বললে, আমাগো শিলাইদহ থিকা আসতাসি

আলুমুদ্দিন দপতর যামু

 

আগুন আর জলের তৈরি তোমার ঠোঁটে

তখনও একচিলতে ব্রহ্মসঙ্গীত লেগেছিল কী গরম কী গরম

গ্যাবার্ডিনের আলখাল্লা ফেলে দিলে ছুঁড়ে

দেখলুম তোমার ফর্সা গায়ে জোঁক ধরেছে

বড়ো জোঁক বর্ষার জোড়াসাঁকোয়

 

সেলিমের দোকানে শিককাবাবের গন্ধে

নেড়েগুলা কী রান্ধতাসে ? জানতে চাইলে

ও বললে, না বুঝলুঁ ? সাঁড়কে ছালন ছে !

আহাঁ দেখুঁ না চখকে

 

চায়ের ঠেকে টাকমাথা চুটকিদাড়ি

ভ্লাদিমির ইলিচ আর সোনালি-চুল ভেরা ইভানোভা জাসুলিচ

আর তোমার মতন রুপোলি দাড়িতে অ্যাক্সেলরদ আর মারতভ

যার গাল আপনাআপনি কাঁপছিল দেখে তুমি বললে

উয়াদের ধড়গুলা কুথায় ?

 

আমি আমার নাচ

থামাতে পারছিলুম না বলে তুমি নিজের একতারাটা দিতে চাইলে

কেননা তোমার পা থেকে নাচ যে পেরেছে খুলে নিয়ে গেছে

আর এখন তো দিনের বেলাও লাইটপোস্টে হ্যালোজেন জ্বলে

কী আনন্দ কী আনন্দ

 

সদর স্ট্রিটের বারান্দায়

তোমার তিনঠেঙে চেয়ারখানা পড়ে আছে

হুড়োহুড়ি প্রেম করতে গিয়ে পায়া ভেঙে ফেলেছিলে

তারিখ-সন লেখা আছে জীবনস্মৃতিতে

কী ভালোবাসা কী ভালোবাসা

 

তোমার ফিটনগাড়ির ঘোড়া তো

কোকিলের মতন ডাকছে দাদু রবীন্দ্রনাথ

আর তোমার বীর্যের রেলিক্স থেকে কতজন যে পয়দা হয়েছিল

মাটি থেকে ছোলাভাজা তুলে খাচ্ছে

 

ওগুলা কী ? আমি বললুম কাক ।

এ-গুলারে কী কয় ? আমি বললুম সেলিমকেই জিগেস করো,

ও এই অঞ্চলে তোলা আদায় করে । কী ঐশ্বর্য কী ঐশ্বর্য

( মলয় রায়চৌধুরীর ‘কবিতাসমগ্র ১৯৬১-২০০৪’ থেকে পুনঃপ্রকাশিত )