সোনালী কাবিন-৫

আমার ঘরের পাশে ফেটেছে কি কার্পাশের ফল? গলায় গুঞ্জার মালা পরো বালা, প্রাণের শবরী, কোথায় রেখেছো বলো মহুয়ার মাটির বোতল নিয়ে এসো চন্দ্রালোকে তৃপ্ত হয়ে আচমন করি। ব্যাধির আদিম সাজে কে বলে যে তোমাকে চিনবো না নিষাদ কি কোনদিন পক্ষিণীর গোত্র ভুল করে? প্রকৃতির ছদ্মবেশে যে-মন্ত্রেই খুলে দেন খনা একই জাদু আছে জেনো কবিদের আত্মার […]

সোনালী কাবিন – ১

সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়না হরিণী যদি নাও দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দুটি, আত্মবিক্রয়ের স্বর্ন কোনোকালে সঞ্চয় করিনি আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রুকুটি; ভালবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন, ছলনা জানিনা বলে আর কোনো ব্যাবসা শিখিনি দেহ দিলে দেহ পাবে দেহের অধিক মূলধন আমারতো নেই শখি, যেই পণ্যে অলংকার কিনি। বিবসন হও যদি […]

লোকে যাকে প্রেম নাম কহে

এই গতির মধ্যে মনে হয় কি যেন একটা স্থির হয়ে থাকে। আমাদের চারিদিকে যখন কোনো গতিকেই আমরা থামাতে পারছি না। সবকিছুই, না কলম না চিন্তা, এমন কি দীর্ঘজীবী বিপ্লবও মুখ থুবড়ে দ্রুত পেছনে হটে গিয়ে ক্রেনের আংটাকে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে– মহামতি অনড় লেনিনের মূর্তের গলায় উপড়ে ফেলার শিকল পরাতে। তখন কেন মনে হবে এমন একটা […]

রবীন্দ্রনাথ

এ কেমন অন্ধকার বঙ্গদেশ উত্থান রহিত নৈশব্দের মন্ত্রে যেন ডালে আর পাখিও বসে না। নদীগুলো দুঃখময়, নির্পতগ মাটিতে জন্মায় কেবল ব্যাঙের ছাতা, অন্যকোন শ্যামলতা নেই। বুঝি না, রবীন্দ্রনাথ কী ভেবে যে বাংলাদেশে ফের বৃক্ষ হয়ে জন্মাবার অসম্ভব বাসনা রাখতেন। গাছ নেই নদী নেই অপুষ্পক সময় বইছে পুনর্জন্ম নেই আর, জন্মের বিরুদ্ধে সবাই শুনুন, রবীন্দ্রনাথ আপনার […]

ভয়ের চোটে

অঙ্ক নিয়ে বসলে আমার কখন কী যে হয় টেবিলটাও পর হয়ে যায় বইগুলো সব ভয়। ভয়ের চোটে ভাবতে থাকি শহর ভেঙে কেউ দালান কোঠা বিছিয়ে দিয়ে তোলে খেতের ঢেউ। রাস্তাগুলো নদী এবং গলিরা সব খাল ইলেকট্রিকের খাম্বাগুলো পাল্টে হলো তাল। মোটরগাড়ি গরুর পালে হাম্বা তুলে হাঁটে পুলিশগুলো গুলিস্তানে নিড়ানি ঘাস কাটে। আব্বা হলেন কাকতাড়ুয়া আম্মা […]

ভর দুপুরে

মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে মেঘের মত পাল উড়িয়ে কী ভাসে! মাছের মত দেখতে এ কোন পাটুনি ভর দুপুরে খাটছে সখের খাটুনি। ওমা এ-যে কাজল বিলের বোয়ালে পালের দড়ি আটকে আছে চোয়ালে আসছে ধেয়ে লম্বা দাড়ি নাড়িয়ে, ঢেউয়ের বাড়ি নাওয়ের সারি ছাড়িয়ে। কোথায় যাবে কোন উজানে ও-মাঝি আমার কোলে খোকন নামের যে-পাজি হাসেছ, তারে নাও […]

বাতাসের ফেনা

কিছুই থাকে না দেখো, পত্র পুষ্প গ্রামের বৃদ্ধরা নদীর নাচের ভঙ্গি, পিতলের ঘড়া আর হুকোর আগুন উঠতি মেয়ের ঝাঁক একে একে কমে আসে ইলিশের মৌসুমের মতো হাওয়ায় হলুদ পাতা বৃষ্টিহীন মাটিতে প্রান্তরে শব্দ করে ঝরে যায়। ভিনদেশী হাঁসেরাও যায় তাদের শরীর যেন অর্বুদ বুদ্বুদ আকাশের নীল কটোরায়। কিছুই থাকেনা কেন? করোগেট, ছন কিংবা মাটির দেয়াল […]

প্রত্যাবর্তনের লজ্জা

শেষ ট্রেন ধরবো বলে এক রকম ছুটতে ছুটতে স্টেশনে পৌঁছে দেখি নীলবর্ণ আলোর সংকেত। হতাশার মতোন হঠাৎ দারুণ হুইসেল দিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। যাদের সাথে শহরে যাবার কথা ছিল তাদের উৎকণ্ঠিত মুখ জানালায় উবুড় হয়ে আমাকে দেখছে। হাত নেড়ে সান্ত্বনা দিচ্ছে। আসার সময় আব্বা তাড়া দিয়েছিলেন, গোছাতে গোছাতেই তোর সময় বয়ে যাবে, তুই আবার গাড়ি […]

পাখির মতো

আম্মা বলেন, পড়রে সোনা আব্বা বলেন, মন দে; পাঠে আমার মন বসে না কাঁঠালচাঁপার গন্ধে। আমার কেবল ইচ্ছে জাগে নদীর কাছে থাকতে, বকুল ডালে লুকিয়ে থেকে পাখির মতো ডাকতে। সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে কর্ণফুলীর কূলটায়, দুধভরা ঐ চাঁদের বাটি ফেরেস্তারা উল্টায়। তখন কেবল ভাবতে থাকি কেমন করে উড়বো, কেমন করে শহর ছেড়ে সবুজ গাঁয়ে ঘুরবো […]

নোলক

আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশে। নদীর কাছে গিয়েছিলাম, আছে তোমার কাছে ? -হাত দিওনা আমার শরীর ভরা বোয়াল মাছে। বললো কেঁদে তিতাস নদী হরিণবেড়ের বাঁকে শাদা পালক বকরা যেথায় পাখ ছড়িয়ে থাকে। জল ছাড়িয়ে দল হারিয়ে গেলাম বনের দিক সবুজ বনের হরিৎ টিয়ে করে রে ঝিকমিক। বনের […]