কে

১৮. কে বেরিয়ে যে আসে সে তো এভাবেই আসে, দুর্বিনীত ধ্রুপদী টংকার তুলে লন্ডভন্ড করে চলে আসে মৌলিক ভ্রমণে, পথে প্রচলিত রীতি-নীতি কিচ্ছু মানে না। আমি এক সেরকম উত্থানের অনুপম কাহিনী শুনেছি। এমন অনমনীয় পৃথক ভ্রমণে সেই পরিব্রাজকের অনেক অবর্ণনীয় অভিমান থাকে, টসটসে রসাল ফলের মতো ক্ষত আর ব্যক্তিগত ক্ষয়-ক্ষতি থাকে। তাকে তুমুল শাসায় মূলচ্যুত […]

কবুতর

১৭. কবুতর প্রতীক্ষায় থেকো না আমার আমি আসবো না, থাকলো কথার কবুতর কখনো বাইষ্যা মাসে পেয়ে অবসর নিতান্তই জানতে ইচ্ছে হলে আমার খবর পাখিকে জিজ্ঞেস করো নিরিবিলি, পক্ষপাতহীন পাখি বিস্তারিত সংবাদ জানাবে কী কী ব্যথা এবং আর্দ্রতা রেখেছে দখল করে আশৈশব আমার একালা, আমি কতো একা, কতোখানি ক্ষত আর ক্ষতি নিয়ে বেদনার অনুকূলে প্রবাহিত আমার […]

কবিতার কসম খেলাম

১৬. কবিতার কসম খেলাম আমি আর আহত হবো না, কোনো কিছুতেই আমি শুধু আর আহত হবো না। যে নদী জলের ভারে হারাতো প্লাবনে এখন শ্রাবণে সেই জলের নদীর বুকে জলাভাবে হাহাকার দেখে আমি আহত হবো না। সবুজ সবুজ মাঠ চিরে চিরে কৃষকের রাখালের পায়ে গড়া দু’পায়া পথের বুকে আজ সেই সরল সুন্দর সব মানুষের চিতা […]

কবি ও কবিতা

১৫. কবি ও কবিতা কবির জীবন খেয়ে জীবন ধারণ করে কবিতা এমন এক পিতৃঘাতী শব্দের শরীর, কবি তবু সযত্নে কবিতাকে লালন করেন, যেমন যত্নে রাখে তীর জেনে-শুনে সব জল ভয়াল নদীর। সর্বভূক এ কবিতা কবির প্রভাত খায় দুপুর সন্ধ্যা খায়, অবশেষে নিশীথে তাকায় যেন বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরী, কবিকে মাতাল করে শুরু হয় চারু তোলপাড়, যেন এক […]

একটি পতাকা পেলে

১৪. একটি পতাকা পেলে কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’। কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে। কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে […]

উৎসর্গ

১৩. উৎসর্গ আমার কবিতা আমি দিয়ে যাবো আপনাকে, তোমাকে ও তোকে। কবিতা কি কেবল শব্দের মেলা, সংগীতের লীলা? কবিতা কি ছেলেখেলা, অবহেলা রঙিন বেলুন? কবিতা কি নোটবই, টু-ইন-ওয়ান, অভিজাত মহিলা -সেলুন? কবিতা তো অবিকল মানুষের মতো চোখ-মুখ-মন আছে, সেও বিবেক শাসিত, তারও আছে বিরহে পুষ্পিত কিছু লাল নীল ক্ষত। কবিতা তো রূপান্তরিত শিলা, গবেষণাগারে নিয়ে […]

উপসংহার

১২. উপসংহার আমার যত শুভ্রতা সব দেবো, আমি নিপুণ ব্লটিং পেপার সব কালিমা, সকল ব্যথা ক্ষত শুষেই নেবো। ২৪.৭.৮০

ইদানিং জীবন যাপন

১১. ইদানিং জীবন যাপন আমার কষ্টেরা বেশ ভালোই আছেন, প্রাত্যহিক সব কাজ ঠিক-ঠাক করে চলেছেন খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, অফিসে যাচ্ছেন, প্রেসক্লাবে আড্ডাও দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে কষ্টেরা আমার সারাটা বিকেল বসে দেখেন মৌসুমী খেলা, গোল স্টেডিয়াম যেন হয়ে যায় নিজেই কবিতা। আজকাল আমার কষ্টেরা বেশ ভালোই থাকেন, অঙ্কুরোদ্‌গম প্রিয় এলোমেলো যুবকের অতৃপ্ত মানুষের শুশ্রূষা করেন। বিরোধী দলের ভুল […]

ইচ্ছে ছিলো

১০. ইচ্ছে ছিলো ইচ্ছে ছিলো তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো ইচ্ছে ছিলো তোমাকেই সুখের পতাকা করে শান্তির কপোত করে হৃদয়ে উড়াবো। ইচ্ছে ছিলো সুনিপূণ মেকআপ-ম্যানের মতো সূর্যালোকে কেবল সাজাবো তিমিরের সারাবেলা পৌরুষের প্রেম দিয়ে তোমাকে বাজাবো, আহা তুমুল বাজাবো। ইচ্ছে ছিলো নদীর বক্ষ থেকে জলে জলে শব্দ তুলে রাখবো তোমার লাজুক চঞ্চুতে, জন্মাবধি আমার শীতল […]

আমার সকল আয়োজন

৯. আমার সকল আয়োজন আমাকে দুঃখের শ্লোক কে শোনাবে? কে দেখাবে আমাকে দুঃখের চিহ্ন কী এমন, দুঃখ তো আমার সেই জন্ম থেকে জীবনের একমাত্র মৌলিক কাহিনী। আমার শৈশব বলে কিছু নেই আমার কৈশোর বলে কিছু নেই, আছে শুধু বিষাদের গহীন বিস্তার। দুঃখ তো আমার হাত–হাতের আঙুন–আঙুলের নখ দুঃখের নিখুঁত চিত্র এ কবির আপাদমস্তক। আমার দুঃখ […]