মাধবীর জন্যে

আয়নার পাশে একটু অন্ধকার ছায়া এঁকে দাও। ব্যথিত দৃশ্যের পট জুড়ে থাক চিত্রিক আঁধার। দেয়ালের ছবিটাকে একটু সরাতে হবে ভাই। ওটা নয়, এই ছবিটাকে। জুলিয়েট জ্যেৎস্নার ভিতরে রক্তে উচ্চকিত তৃষ্ণা রোমিওর উষ্ণ ওষ্ঠাধরে। ব্যাস, ব্যাস। লাইটস্ বার্ণিং। মাধবী, আসুন। একটা ক্লোজআপ নেব। এখানে দাঁড়ান, একটু বা দিক ঘেষে প্লীজ। মনিটার… মাধবী বলুন- কিছু লাভ আছে […]

মানুষ পেলে আর ইলিশমাছ খায় না

আমি খুব চিকেন খেতে ভালোবাসি চিকেনগুলো নালা-নর্দমা খেতে ভালোবাসে নালা নর্দমাগুলো ভালোবাসে কলকাতার চিতল-পেটি অ্যাভিনিউ অ্যাভিনিউগুলো ভালোবাসে সমুদ্র-কাঁকড়ার মতো ঝাঁকড়া গাছের কাবাব। তবে কলকাতার এখন ডায়াবেটিস। কলকাতার ইউরিনে এখন বিরানব্বই পার্সেন্ট সুগার। কলকাতার গলব্লাডারে ডাঁই ডাঁই পাথর গাছপালা খেয়ে আগের মতো হজম করতে পারে না বলে কলকাতা এখন মানুষ খায়। আগে বছরে একবার কোটালের হাঁক […]

সোনার মেডেল

বাবু মশাইরা গাঁগেরাম থেকে ধুলোমাটি ঘসটে ঘসটে আপনাদের কাছে এয়েচি। কি চাকচিকন শহর বানিয়েছেন গো বাবুরা রোদ পড়লে জোছনা লাগলে মনে হয় কাল-কেউটের গা থেকে খসেপড়া রুপোর তৈরি একখান্ লম্বা খোলস। মনের উনোনে ভাতের হাঁড়ি হাঁ হয়ে আছে খিদেয় চালডাল তরিতরকারি শাকপাতা কিছু নেই কিন্তু জল ফুটছে টগবগিয়ে। বাবু মশাইরা , লোকে বলেছিল, ভালুকের নাচ […]

সোনার কলসী ভেঙে যায়

সোনার কলসী ভেঙে যায়, উজ্জল সিঁড়িতে। পাহাড়ও এমন করে ভাঙে ঝর্ণার আছড়ানো জলে, সাদা ফেনা, ঘুর্ণিময় তোড়, অথচ তা রক্তারক্তি যুদ্ধদাঙ্গা নয়। এই ভাঙ্গা পরস্পর মিশে যাবে বলে এর স্বাদ ওর, করতলে ওর দেহে ঢলোঢলো শালবীথি-বাসানো প্লাবনে এর দেহ নেমে যাবে স্নানে। সোনার কলসী ভেঙে যায়, উজ্জল সিঁড়িতে। নবীন জলের ঢেউ ধাপে ধাপে নামে ও […]

যখন তোমার ফুলবাগানে

কালকে তোমার ডাল ভেঙেছি, ফুল ছিঁড়েছি। অপরাধের হাওয়ায় ছিল ত্বরিৎগতি সেই কাঁপুনি ঝাউ পাতাতে, ক্ষয়ক্ষতি যার গায়ের ধুলো এমন মাদল, যার ডাকে বন আপনি দোলে পাহাড় ঠেলে পরাণ-সখা বন্ধু আসে আলিঙ্গনে সমস্ত রাত পায়ে পরায় সর্বস্বান্ত নাচের নেশা। দস্যু যেমন হাতড়ে খোঁজে বাউটি বালা কেউর কাঁকন, জলে যেমন সাপের ছোবল আলগা মাটির আঁচল টানে দ্বিধাকাতর […]

সেই গল্পটা

আমার সেই গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। শোনো। পাহাড়টা, আগেই বলেছি ভালোবেসে ছিলো মেঘকে আর মেঘ কি ভাবে শুকনো খটখটে পাহাড়টাকে বানিয়ে তুলেছিল ছাব্বিশ বছরের ছোকরা সে তো আগেই শুনেছো। সেদিন ছিলো পাহাড়টার জন্মদিন। পাহাড় মেঘকে বললে – আজ তুমি লাল শাড়ি পরে আসবে। মেঘ পাহাড়কে বললে – আজ তোমাকে স্নান করিয়ে দেবো চন্দন জলে। ভালোবাসলে […]

ফটিক টিং

দেখতে মানুষ চামড়াধারী নাকের ফুটো, দাঁতের মাড়ি, কিন্তু বাপু হঠাত্ কেন মাথায় দুটো লম্বা শিং ? — আজ্ঞে আমি ফটিক টিং | শিং দিয়ে কি গুঁতোও নাকি ? মেজাজ বুঝি আগুন খাকি ? কিন্তু বাপু পানে সঙ্গে গিলছ কেন খাবলা হিং ? — আজ্ঞে আমি ফটিক টিং | বেশ তো দেখি হাসতে পারো যক্ষা কাশি […]

স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল

পুরনো পকেট থেকে উঠে এল কবেকার শুকনো গোলাপ | কবেকার ? কার দেওয়া ? কোন্ মাসে ? বসন্তে না শীতে ? গোলাপের মৃতদেহে তার পাঠযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন নেই | স্মৃতি কি আমারও আছে ? স্মৃতি কি গুছিয়ে রাখা আছে বইয়ের তাকের মত, লং প্লেইং রেকর্ড-ক্যাসেটে যে-রকম সুসংবদ্ধ নথীভুক্ত থাকে গান, আলাপচারীতা ? আমার স্মৃতিরা বড় উচ্ছৃঙ্খল, […]

হে স্তন্যদায়িনী

তোমার দুধের মধ্যে এত জল কেন ? তোমার দুধের মধ্যে এত ঘন বিশৃঙ্খলা কেন ? রক্ত ঝরে না ভেজালে কোনো সুখ দরজা খোলে না | ময়ূরও নাচে না তাকে দু-নম্বরী সেলামী না দিলে | হাতুড়ির ঘায়ে না ফাটালে রাজার ভাঁড়ার থেকে এক মুঠু খুদ খেতে পায় না চড়ুই | স্বপ্নে যারা পেয়ে গেছে সচেতন ফাউন্টেন […]

আরশিতে সর্বদা এক উজ্জল রমনী

আরশিতে সর্বদা এক উজ্জল রমণী বসে থাকে। তার কোনো পরিচয়, পাসপোর্ট, বাড়ির ঠিকানা মানুষ পায়নি হাত পেতে। অনুসন্ধানের লোভে মুলত সর্বতোভাবে তাকে পাবে বলে অনেক মোটর গাড়ি ছুটে গেছে পাহাড়ের ঢালু পথ চিরে অনেক মোটর গাড়ি চুরমার ভেঙে গেছে নীল সিন্ধুতীরে তারও আগে ধ্বসে গেছে শতাধিক প্রাসাদের সমৃদ্ধ খিলান হাজার জাহাজ ডুবি হয়ে গেছে হোমারের […]