ছবি খেলা

মনে আছে সেই রাত্রি? সেই চাকভাঙা মধুর মতন জ্যোৎস্না উড়ো উড়ো পেঁজা মেঘ অলীক গর্ভের প্রজাপতি দুগ্ধবর্ণ বাতাসের কখনো স্পর্শ ও ছবি খেলা মিনারের মতোন পাঁচটি প্রচীন সুউচ্চ গাছ, সেই মানবিক চষা মাঠ, তিনটি দিগন্ত দূর, আরও দূর পুকুরের ঢালু পাড়ে তুমি শুয়ে ছিলে মনে আছে সেই রাত্রি, সঠিক পথেই ঠিক ভুল করে যাওয়া? বুকে […]

কবিতা মুর্তিমতী

শুয়ে আছে বিছানায়, সামনে উম্মুক্ত নীল খাতা উপুড় শরীর সেই রমণীর, খাটের বাইরে পা দু’খানি পিঠে তার ভিজে চুল, এবং সমুদ্রে দু’টি ঢেউ ছায়াময় ঘরে যেন কিসের সুদন্ধ, – জানায় রৌদ্র যেন জলকণা, দূরে নীল নক্ষত্রের দেশ। কী লেখে সে, কবিতা? না কবিতা রচনা করে তাকে? সে বড় অসি’র, তার চোখে বড় বেশী অশ্রু আছে […]

সহজ

কেমন সহজ আমি ফোটালাম একলক্ষ ফুল হঠাৎ দিলাম জ্বেলে কয়েকটা সুর্য চাঁদ তারা আবার খেয়াল হলে এক ফুঁয়ে নেভালাম সেই জ্যোৎস্না (মনে পড়ে কোন্‌‌ জ্যোৎস্না?) নেভালাম সেই রোদ (তাও মনে পড়ে?) নিন্দুকে নানান কথা আমাকে দেখিয়ে বলবে, বিশ্বাস করো না। হয়তো বলবে শিশু কংবা নির্বোধ অথবা ম্যাজিকওয়ালা- ছেঁড়া তাঁবু ফাটা বজনা, নানান সেলাই করা কালো […]

বিবৃতি

ঊনিশে বিধবা মেয়ে কায়ক্লেশে উন্‌তিরিশে এসে গর্ভবতী হলো, তার মোমের আলোর মতো দেহ কাঁপালো প্রাণান্ত লজ্জা, বাতারে কুটিল সন্দেহ সমস্ত শরীরে মিশে, বিন্দু বিন্দু রক্ত অবশেষে যন্ত্রনার বন্যা এলো, অন্ধ হলো চক্ষু, দশ দিক, এবং আড়ালে বলি, আমিই সে সুচতুর গোপন প্রেমিক। দিবাসার্ধ পায়ে হেঁটে লিরি আমি জীবিকার দাসত্ব-ভিখারী ক্লান্ত লাগে সারারাত, ক্লান্তি যেন অন্ধকার […]

প্রার্থনা

ঋজু শাল অশ্বত্থের শিকড়ে শিকড়ে যত ক্ষুধা সব তুমি সয়েছ, বসুধা। স্তব্ধ নীল আকাশের দৃশ্য অন্তহীন পটভূমি চক্ষুর সীমানা-প্রান্তে বেঁধে দিয়ে তুমি এঁকে দিলে মাঠ বন বৃষ্টি-মগ্ন নদী-তার দুরাভাস তীর আমাকে নিঃশেষে দিলে তোমার একান্ত মৃদু মাটির শরীর। আমার জন্মের ভোর সূযর্য-শরে আহত মাটিতে প্রত্যহকে ধরে থাকা অবাধ্য মুঠিতে। নিবির ঘুমের মৌন জীবনের অস্পষ্ট আভাসে […]

দুপুর

রৌদ্রে এসে দাঁড়িয়েছে রৌদ্রের প্রতিমা এ যেন আলোরই শস্য, দুপুরের অস্থির কুহক অলিন্দে দাঁড়ানো মূর্তি ঢেকে দিল দু’চক্ষুর সীমা পথ চলতে থম্‌কে গেলো অপ্রতিভ অসংখ্য যুবক। ভিজে চুল খুলেছে সে সুকুমার, উদাস আঙুলে স্তনের বৃন্তের কাছে উদ্বেলিত গ্রীষ্মের বাতাস কি যেন দেখলো মিলে এক সঙ্গে নিল দীর্ঘশ্বাস। একজন যুবক শুধু দূর থেকে হেঁটে এসে ক্লান্ত […]

তুমি

আমার যৌবনে তুমি স্পর্ধা এনে দিলে তোমার দু’চোখে তবু ভূরুতার হিম। রাত্রিময় আকাশের মিলনান্ত নীলে ছোট এই পৃথিবীকে করোছো অসীম। বেদনা মাধুর্যে গড়া তোমার শরীর অনুভবে মনে হয় এখনও চিনি না তুমিই প্রতীক বুঝি এই পৃথিবীর আবার কখনও ভাবি অপার্থিব কিনা। সারাদিন পৃথিবীকে সূর্যের মতন দুপুর-দগ্ধ পায়ে করি পরিক্রমা, তারপর সায়াহ্নের মতো বিস্মরণ- জীবনকে সি’র […]

চতুরের ভূমিকা

কিছু উপমার ফুল নিতে হবে নিরুপমা দেবী যদিও নামের মধ্যে বেখেছেন আসল উপমা ক্ষণিক প্রশ্রয়-তুষ্টি চায় আজ সামান্য এ কবি, রবীন্দ্রনাথেরও আপনি চপলতা করেছেন ক্ষমা। যদিও প্রত্যহ আসে অগণিত সুঠাম যুবক নানা উপহার আনে সময় সাগর থেকে তুলে আমি তো আনি নি কিছু চম্পা কিংবা কুর্চি কুরুবক সাজাতে চেয়েছি শুধু স্পর্শহীন উপমার ফুলে। আকাশে অনেক […]

সত্যবদ্ধ অভিমান

এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ আমি কি এ হাতে কোনো পাপ করতে পারি ? শেষ বিকেলের সেই ঝুল বারান্দায় তার মুখে পড়েছিল দুর্দান্ত সাহসী এক আলো যেন এক টেলিগ্রাম, মুহূর্তে উন্মুক্ত করে নীরার সুষমা চোখে ও ভুরুতে মেশা হাসি, নাকি অভ্রবিন্দু ? তখন সে যুবতীকে খুকি বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়– আমি ডান হাত তুলি, পুরুষ […]

পাওয়া

অন্ধকারে তোমার হাত ছুঁয়ে যা পেয়েছি, সেইটুকুই তো পাওয়া যেন হঠাৎ নদীর প্রান্তে এসে এক আঁজলা জল মাথায় ছুঁইয়ে যাওয়া।