বইয়ের গল্প

দুই দিন আগে আমার এক বন্ধু আমার কাছে ৫ টি বইয়ের নাম জানতে চেয়েছিলেন “যে বই পড়ে আমার মনে হয়েছে অন্যেরও পড়া উচিত”। আমি খুব ভাবনায় পড়ে গেলাম। আমি সব ধরনের বই পড়ি, পড়তে ভালোবাসি।

পাঠ্য থেকে অপাঠ্য সব বই- ই। স্কুল জীবনে পাঠ্য বইয়ের ভিতরে লুকিয়ে অপাঠ্য বই পড়েছি। রোমেনা আফাজের “দস্যু বনহুর”। কাজী আনোয়ার হোসেন এর “মাসুদ রানা “।

ইমদাদুল হক মিলন, মঈনুল আহসান সাবের, হাসনাত আব্দুল হাই, সমরেশ বসু, সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আবুল বাসার, বুদ্বদেব গুহ …। পড়েই চলেছি …। সমরেশ মজুমদারের “বাঙ্গালীর নষ্টামী” নামের বই এ কয়েকটি বইয়ের নাম উল্লেখ আছে, উনার মতে এই বই গুলোই বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ট লিখা।

সুতরাং আপনার সন্তানকে পড়তে বলুন। পাঠ্য থেকে অপাঠ্য সব। পাঠ্য – এর চেয়ে অপাঠ্যই কাজে লাগে বেশী, মনেও ধরে। পাঠ্য আর অপাঠ্য এটা কি ভাবে নির্ধারিত হয়। আমার পরিচিত কিছু মানুষ আছেন তাঁরা যখন অপাঠ্য বই পড়তে শুরু করেন তখন উনাদের কাছে সব লিখাই অসাধারন মনে হয়। উনাদের এই অনুভুতি খুব ভালো লাগে … আবার এমন কাউকে দেখেছি যিনি পড়তে ভালো বাসেন না কারন তিনি মনে করেন “অনেক পড়ার সমস্যা হচ্ছে আমার আগে একথা কেউ লিখে ফেলেছে”। খুব মজার তাই না।
অপাঠ্য বলে কোন বই আছে কিনা জানি না।

বঙ্কিমের কমলা কান্তের দপ্তর ,রবীন্দ্রনাথের চতুরঙ্গ, শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত, তারাশঙ্করের হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, বিভূতিভূষণের আরণ্যক, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি, সমরেশ বসুর টানাপোড়েন, অদ্বৈত মল্ল বর্মনের তিতাস একটি নদীর নাম, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের পারাপার, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে, প্রফুল্ল রায়ের কেয়াপাতার নৌকা, মুজতবা আলির দেশে বিদেশে, আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম প্রতিশ্রুতি, সুনীল গাঙ্গুলির সেই সময়।

কোনো শিক্ষিত বাঙালির সঙ্গে আলাপ হলেই এই লিষ্টের একটি কপি তাঁর হাতে তুলে দিয়ে বলতাম, -দয়া করে এই কয়েকটা বই পড়ে ফেলুন, তামাম বাংলা সাহিত্য পড়তে হবে না, শুধু ওই কটি; না পড়লে আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমার খুব লজ্জা করবে। কতটা কাজ হয়েছিল জানি না, তবে কেউ কেউ আমার মস্তিস্কের সুস্থতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। যাঁদের তালিকা দিতাম তাঁরা কিন্তু আমাকে দেখলেই এড়িয়ে চলতেন।

—– সমরেশ মজুমদারের “আকালচার” ( বাঙালির নষ্টামি)

রেটিং করুনঃ
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (No Ratings Yet)
Loading...
মিতা- র আরো পোষ্ট দেখুন

২ টি মন্তব্য

  1. বই হচ্ছে মানুষের জীবনের বাড়তি একটি জীবন।
    সুষ্ঠু এবং মানসিক প্রশান্তিতে বেঁচে থাকার অন্যতম সঙ্গী হচ্ছে বই।
    বই বই আর বই হলে আমার ব্যক্তিজীবনে আমার মনে হয় না বাড়তি কিছু লাগে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

Comments are closed.